শিশুরা একটু দুরন্তই হয়। সারা দিন ছুটোছুটি করে মাতিয়ে রাখে সবাইকে। এক জায়গায় তাকে বই নিয়ে বসিয়ে রাখা মুশকিল। কিছুতেই পড়তে চায় না। লেখা-পড়া করতে বললেই নানা বায়না জুড়ে দেয়। কখনো কখনো শিশুর চঞ্চল আচরণ আপনাকে অস্থির করে তোলে, চিন্তায় ফেলে দেয়। আপনার মনে নানা প্রশ্ন আসে শিশুর সঠিক বুদ্ধির বিকাশ হচ্ছে তো?
ছোট শিশু একটু দুষ্টুমি করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে তার বেড়ে ওঠার পাশাপাশি বুদ্ধির বিকাশও জরুরি। আর এর জন্য শিশুর খাবার-দাবারের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে।
এমন কিছু খাবার আছে যা শিশুর মস্তিষ্ক সক্রিয় ও সতেজ রাখে। আর মস্তিষ্ক সক্রিয় এবং সতেজ থাকলে শিশুর মেধা ও বুদ্ধি বিকাশ হয়। খাবার গুলোর তালিকাটি দেখে নেইঃ
মায়ের দুধ: শিশুকে অন্তত দুই বছর বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। কারণ মায়ের দুধ পান করলে শিশুর বুদ্ধিমত্তা বাড়ে।
ডিম: ডিমে রয়েছে প্রচুর আয়রন। যা লোহিত কণিকা তৈরি করে রক্তের উপাদানে সঠিক মাত্রা বজায় রাখে। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ হয়। যা চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তা বাড়ায়। গবেষণায় দেখা যায়, যারা প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খায় তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় অন্তত ৭০% বেশি ভালো থাকে।
আখরোট: আখরোটে অনেক বেশি পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এটি শিশুসহ সব বয়সীদেরই মস্তিষ্কের যে কোনো রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বাদাম: শিশুকে প্রতিদিন বাদাম খেতে দিন। কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চীনাবাদামসহ যে কোনো ধরনের বাদামই শিশুর মানসিক বৃদ্ধিতে সহায়ক। কারণ বাদামে রয়েছে ভিটামিন ‘ই’ যা মস্তিষ্কের সমন্বয় সাধনের ক্ষমতা বাড়ায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন গলায় না আটকায়।
ব্লু বেরি: বুদ্ধি বিকাশে ব্লু বেরির জুড়ি নেই। এতে আছে ফ্ল্যাভোনয়েডস। তাই ব্লু বেরিকে ব্রেইনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর খাবার বলে ধরা হয়।
তবে এর পাশা পাশি আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলো মস্তিষ্ক বিকাশের জন্য জরুরি। আসুন তাহলে জেনে নেই আপনার সোনামনির বুদ্ধি বিকাশে আরো কি কি করণীয়:
১) গর্ভাবস্থায় ধূমপান করবেন না। কেননা এটি শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে ব্যাহত করে।
২) শিশুকে অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়ান। বিকের দুধ নবজাতকের জন্য খুন গুরুত্বপুর্ণ। এটি যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনি মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে।
৩) শিশুকে সংগীতের সঙ্গে পরিচিত করুন। এতে মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হওঁয়। শেখার ক্ষমতা বাড়ে।
৪) টিভি দেখার সময় কমিয়ে দিন। বেশি টিভি দেখলে সৃজনশীল কাজ করার পরিমান কমে যায়। মস্তিষ্কের উন্নতি হয় না।
৫) শিশুদের মজার মজার গল্পের বই পড়ে শোনান।
৬) শিশুকে ক্যাফেইন (চা, কফি) জাতীয় খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। বেশি মাত্রায় এসব খাওয়া মস্তিষ্কের বিকাশে ব্যাহত করে।
৭) শিশুকে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করান। তে মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেনের সঞ্চালন ভালো হবে।
৮) সৃজনশীল খেলনা দিয়ে শিশুকে খেলতে দিন।
৯) শিশুকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ান। আপেল, তরমুজ, কমলা, ডার্ক চকোলেট, ব্রকলি ইত্যাদি।
১০) শিশুর মস্তিষ্ক ভালো রাখতে ব্যায়াম করান